নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮
ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে আজ দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে ঐক্যফ্রন্টের সব দল। ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এ কথা নিশ্চিত করেন।
ঐক্যফ্রন্ট শরিকদের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী, যাঁরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে তাদের তিনটি শর্ত মানতে হবে:
১। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে শহীদ জিয়া বলতে হবে।
২। জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে স্বীকার করতে হবে।
৩। মনোনয়ন পত্র দাখিলের সঙ্গে সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে হবে।
গয়েশ্বর রায় চৌধুরী আরও বলেন, ‘তাঁরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে, আবার কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কথা বলবে- এমন হওয়া চলবে না। এমন লোকদের ধানের শীষ প্রতীক নেওয়ার কোনো অধিকার নেই। এ বিষয়ে আর কেউ আপত্তি না করুক, আমি করবো।’
গয়েশ্বর জানান, মনোনয়ন নিয়ে আগামীকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর প্রস্তাবের কথা তুলে ধরবেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে প্রাক্তন আওয়ামী লীগারের সংখ্যা কম নয়। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন নিজেই একজন প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা। তাঁর দল গণফোরামের অন্য নেতারাও প্রায় সবাই প্রাক্তন আওয়ামী লীগার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও প্রাক্তন আওয়ামী লীগার। এই নেতারা কখনোই জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকার করেন না বা তাঁর নামের সামনে সম্মানসূচক শহীদ শব্দটি ব্যবহার করেন না। তাছাড়া এই নেতারা কখনোই জিয়ার মাজার জিয়ারত করেননি।
গয়েশ্বর রায় চৌধুরী দাবি করেছেন, তাঁর প্রস্তাবে বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীর নিরঙ্কুশ সমর্থন রয়েছে। তবে গয়েশ্বরের প্রস্তাবে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কী করবেন তা এখনো জানা যায়নি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/ জেডএ
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।